Wednesday, September 1, 2010

আস্তিকগণ কি নাস্তিক নন?

আস্তিকগণ ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন। তার মধ্যে প্রধানত দুপ্রকার আছে।
১. একেশ্বরবাদী
২. বহুঈশ্বরবাদী

আস্তিকগণের ধারণা/বিশ্বাস সমস্ত ভূ-মন্ডল, বিশ্বজগতের সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর মানে সবকিছু সৃষ্টি হয়েছে ঈশ্বরের মাধ্যমে। তাই যদি হয় তবে ঈশ্বরকে সৃষ্টি করলেন কে? ধর্মগুলো কি এ প্রশ্নের সমাধান দেয়? যদি দিতে না পারে তবে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করতে নিষেধ করে কেন?

শূণ্য (nothing) থেকে কোন কিছুর উদ্ভব হতে পারে না। ঈশ্বরকে সৃষ্টি করতে হলে দ্বিতীয় শক্তি বা অস্তিত্বের প্রয়োজন। সে অস্তিত্ব যদি ঈশ্বরকে সৃষ্টি করে থাকেন তবে তিনি আরো Superior. তাকে বড় ঈশ্বর (Master God) বলা চলে। আস্তিকগণ কি উল্লেখিত বড় ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন? যদি বিশ্বাস না করেন তবে তারা তারা নিজেদের আস্তিক দাবি করেন কেমন করে? তারা আরো বড় প্রকারের নাস্তিক নন কি? আর যদি বিশ্বাস করেন তবে একেশ্বরবাদ টিকে থাকে কেমন করে?

যদি দ্বিতীয় ঈশ্বরের (Master God) অস্তিত্ব স্বীকার করা হয় তাতেও সকল সমস্যার সমাধান হয় না যদিও পূর্ববর্তী প্রশ্ন এবং প্রস্তাবসমূহ ঠিকই বজায় থাকে। নতুন প্রশ্নের জন্ম হয়, দ্বিতীয় ঈশ্বরকে সৃষ্টি করলেন কে?
বিভিন্ন প্রকার ধর্মে যে ঈশ্বরের ধারণা আছে তা ভিন্ন। একেশ্বরবাদ, বহুঈশ্বরবাদ নিয়ে মতভেদ তো আছেই। একেশ্বরবাদী ধর্মসমূহেও আছে দ্বিমত। যেমন ইসলাম ধর্ম অনুসারে ঈশ্বরের কোন সন্তান নেই কিন্তু খ্রিস্ট ধর্মে আছে। এক ধর্মের ঈশ্বরকে যেভাবে আরাধনা করলে সন্তুষ্ট হন অন্য ধর্মের ঈশ্বর সেভাবে সন্তুষ্ট হন না। বরং কোন ক্ষেত্রে বিরাগভাজন হন এবং ঐরকম আরাধনার জন্য শাস্তি দিয়ে থাকেন। তাই ধর্মসমূহে ঈশ্বর সম্পর্কে যে তথ্য আছে তা বিভাজিত এবং পরস্পর বিরোধী। সুতরাং ধর্মে নতুন প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় না।

ধর্ম ব্যতীত অন্য কোথাও ঈশ্বরের সংখ্যা, অবস্হান, অস্তিত্ব সম্পর্কে কোন তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায় না। এমনকি বিজ্ঞানীগণ যখন কোন সূত্র বর্ণনা করেন তখন ধরে নেন না যে তার উপর ঈশ্বরের প্রভাব আছে। সুতরাং সমাজে ঈশ্বর সম্পর্কে যেসব ধারণা এবং কল্পকথা প্রচলিত আছে তার সবই কুসংস্কার নয় কি? যদি তাই হয় তবে একেশ্বরবাদ, বহুঈশ্বরবাদ এবং ভিন্ন ধর্মীয় মতবাদের কারণে যে সকল আধ্যাত্মিক লড়াই হল সব অনর্থক নয় কি? সেসব লড়াইয়ে যে সকল নিরীহ মানুষজনের মৃত্যু ঘটেছে ধর্মসমূহ সেসব মৃত্যুর জন্য দায়ী মানব বা মানবগোষ্ঠীর জন্য যথোপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্হা করেছে কি? যদি না করে থাকে তবে সৃষ্ট বৈষম্য এবং অবিচারের জন্য ধর্মসমূহ দায়ী নয় কি?

যদি তাই হয় তবে সবচেয়ে নিরাপদ, নিরপেক্ষ এবং যৌক্তিক অবস্হানে যারা আছেন তারা নাস্তিক নন কি?





নিশাচর,
১৮ ভাদ্র ১৪১৭

No comments:

Post a Comment